Insight Zone

“দ্যা এলিফ্যান্ট ক্লক” সভ্যতার মহানায়ক মুসলিমদের যান্ত্রিক ঘড়ি আবিষ্কার

“দ্যা এলিফ্যান্ট ক্লক” সভ্যতার মহানায়ক মুসলিমদের যান্ত্রিক ঘড়ি আবিষ্কার

সময়ের জন্ম ঠিক কবে? এই প্রশ্নের উত্তর হয়ত আমাদের জানা নেই। সৃষ্টির আদি থেকেই মানুষ সময়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব করেই এগিয়ে নিয়েছে তার সভ্যতা আর ইতিহাস। সময় নির্ধারণের জন্য আমরা ঘড়ি ব্যবহার করে থাকি। সর্বপ্রথম কোন দেশে ঘড়ি আবিষ্কার হয় ? ঘড়ি আবিষ্কারের পিছনে রয়েছে কয়েক হাজার বছরের ইতিহাস। কালে কালে নানা বিবর্তনের মধ্য দিয়ে এগিয়েছে সময় দেখার যন্ত্র তথা ঘড়ি।একটা সময় ছিল, যখন সূর্যের অবস্থান দেখেই মানুষ ধারণা লাভ করত সময় সম্পর্কে। সূর্য উঠলে দিন শুরু হতো, আর ডুবে গেলে রাত।
সূর্য ঘড়ি আবিষ্কারের পর থেকেই মানুষ সময়কে লিপিবদ্ধ করে রাখতে চেয়েছিলো। কালের বিবর্তনে মানুষ ভিবিন্ন ধরণের ঘড়ি আবিষ্কার করে। বর্তমানে আমাদের কাছে এনালগ ঘড়ি, ডিজিটাল গড়ি রয়েছে। কিন্তু প্রাচীনকালে তো এমন কোনো ঘড়ির অস্তিত্ব ছিলোনা।তখন মানুষ জল ঘড়ির সাহায্যে সময় নির্ণয় করতো। যা ক্লেন্সিড্র নামে পরচিত ছিলো। ক্লেন্সিড্র ছিলো ফুলদানির মতো দেখতে। একটি পাত্র থেকে অন্য আরেকটি পাত্রে পানি প্রবাহিত করানো হতো। প্রবাহিত পানির পরিমাণ থেকেই সময় নির্ধারণ করা হতো। প্রাচীন মিশরে ১৫০০ খ্রিষ্টপূর্বে এই ঘড়ি ব্যাবহার করা হতো।
১৩ শতাব্দীতে আধুনিক ঘড়ির আবিষ্কার হয় সভ্যতার মহানায়ক মুসলিম আবিষ্কারকের হাত ধরে। তুরুস্কের আল-জাজারি নামক ব্যক্তি “দ্যা এলিফ্যান্ট ক্লক” নামক একটি যান্ত্রিক ঘড়ি আবিষ্কার করেন। ভারতীয় জল ঘড়ি থেকে অনুপ্রাণীত হয়েই বানানো হয়েছিলো “দ্যা এলিফ্যান্ট ক্লক”। এই ঘড়ির সাথে ছিলো একটি মিশরীয় কাল্পনিক পাখি, গ্রিক হাইড্রোলিক প্রযুক্তি, চীনা ড্রাগন, একটি ভারতীয় হাতি এবং আরব দেশীয় জামকাপড় পড়া তিনটি মানুষ। আল-জাজারি তার লেখা বই,”দ্যা বুক অব নলেজ অব ইনজিনিয়াস মেকানিক্যাল ডিভাইসেস” বইতে ভিবিন্ন ধরণের আবিষ্কারের কথা উল্লেখ করেন।
দ্যা এলিফ্যান্ট ক্লকটিতে ভারতীয় জল ঘড়ির মতো একটি পাত্র ছিলো, যা আরেকটি বড় পাত্রে রাখা হতো। ছোট পাত্রটির নিচে একটি ছিদ্র করা হতো; যাতে করে এটির মধ্যে ধীরে ধীরে পানি প্রবেশ করতে পারে এবং ছোট পাত্রটি বড় পাত্রের পানিতে ডুবে যেত। প্রতি আধা ঘন্টায় এই ঘড়িটি শব্দ করতো এবং যান্ত্রিক অংশগুলো নাড়াছড়া করতো। ঘড়ির উপরের দিকের একটি বল নিচে গড়িয়ে একটি ঘন্টার কাঁটায় গিয়ে ধাক্কা দিতো এবং এর সামনে তাকা একটি পুতুল তার হাতের লাঠির সাহায্যে সঠিক সময় দেখাতে পারতো। এরপর বলটি নিচে পড়ে যেত এবং হাতির উপরে থাকা মানুষের ঝাঁঝরী তার পাশে থাকা একটি তামার পাত্রে গিয়ে আঘাত করতো। যার কারণে জোরে শব্দ শোনা যেত।
Elephant clock সূর্য ঘড়ি বালিঘড়ি Water Clock

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x
Scroll to Top